শেখ হোসনা
“কোনোটাই মিথ্যে ছিলো না। কিছু একটার বাধা ছিলো।
“” তোমার কাছে না পরিবারের –না থাক, জবাব শুতে চাই না।শুনে এতো দিনের ধারনাটা পাল্টাতে চাই না!!
কথাটা শেষ করে সুতা খুব দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ছিলো তাই ধ্রুব স্বভাব সুলভ শান্ত ভাবেই”তো, সুখীতো?
“” যদি সুখ একক কিছুতে হয়,তবে সুখি নই।আর যদি ব্যাপক অর্থাৎ টুকরো কিছু কুড়িয়ে নিজেকে সুখী করে নিতে হয় তবে সুখি!!তেমারটা জানতে চাইব না।আমার জানা।
“” হিম, সংসার করছি সুখি না হয়ে কি উপায়? যাক তুমি কি দুদিকটায় সুখি?
“একটির সাথে একটি জড়িত তাই সুখি হওয়া কষ্টকর।তাছাড়া আজ বলে বা জেনে কি হবে?জবাব যাই হোক জেনে দুঃখই পাবে যদি আজ সত্যি স্বীকারোক্তি দেবার সাহস অর্জন করে থাকো!!
” যদি ক্ষমা চাই দেবে?
“দোষেতে তোমাকে কখনোই নেইনি।সে সাহসও হয়নি।কারন আমার বিশ্বাস ছিলে তুমি।হয়তো সে কারনে প্রতারকও ভাবিনি ভেবেছি অপারগ! আজো সেটাই মামতে চাই। তাই অজানাটা অজানাই থাক না হয়।
“” ঠিক আছে তবে জানো আজকাল বড়ো বেশি মনে পরে স্মৃতি গুলি।বলাই হয়নি আবার অ-বলাও ছিলো না অতোটা। যেটাই হোক আজ দেখি সত্যি অনেক গভীর ছিলো কিছু একটা!!
সুতা আবার নিঃশ্বাস টেনে””তাই ক্ষমা চাওয়া? অপরাধ তোমার নয়,আমিই সাজিয়ে ছিলাম তোমায় আমার মন মত করে।অবশ্য তুমি সামান্য লোভী হয়েছিলে নিজের মুল্য যাচাইয়ে That’s it.
“এমনটা কেনো মনে হলো মূল্য যাচাই?
” এটাই সত্য, মনে হওয়া নয়!এই যে আজো আমার সাথে কথা বলতে আসা, কিংবা দেখতে আসা সবটাই হয়তো আমার প্রতি করুনা নয়তো সামান্য ভালোবাসা উপেক্ষা করতে না পারার সাহস। আজ হয়তো জীবনটা যেভাবে চেয়েছো সেভাবে পাওনি। আর নয়তো আমার সাথে গল্প করাটা সেদিনের মতোই ভালো লাগা।তবে জানো আমি আজো তোমায় বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি আমার চেয়েও বেশি। আমি তোমায় সত্যি ভালোই বেসে ছিলাম। তাই তোমার দূর হওয়ার আগ মূহুর্তেও তোমার কাছে কৈফিয়ৎ চাইনি। চেয়েছি তোমার ভালো থাকা তোমার সুখ। আচ্ছা থাকো, একাই সব বললাম!
ধ্রুব কিছুটা অস্থির সুরে””শরীর খারাপ লাগছে?
“ইহি,
“” আরেকটু থাকো।
“” সেই স্বভাব আজো আছে দেখছি।মনে পরে? আগেও চলে আসতে চাইলেই এই ছোট বাক্যটাই বলতে যা আজো আমায় কাদায়!!আচ্ছ!থাকো!
ঠিক এভাবে দ্বিতীয় দিনেও কথা হয়, কারন ধ্রুবতো বাঁধনের কথায় সুতার একই হোটেলে উঠেছে। বাধন কিন্তু কোথাও যায়নি সে ধ্রুবর রুমেই আছে।
সময় হলো রিপোর্ট তোলার। কিন্তু বাধন এখনো ফিরছে না কিছুটা টেনশন নিয়ে সুতা রুমেই বসে আছে।
তাই ধ্রুব ওর রুমে যেয়ে””কি হলো?আজ ছাদে এলে না, শরীর বেশি খারাপ?
“” না, না, শরীর ঠিক আছে, আজ রিপোর্ট তুলবার কথা বাধনটা এখনো এলো না।যাক চলো ছাদে যাই।
“” ভয় পাচ্ছো আমাকে?এভাবে ছাদ বাহানায় তাড়াচ্ছো।
“তোমাকে কোনো কালেই ভয় নেই! নিজেকেই পাচ্ছি। চলো বাধন আসছে কিনা ছাদ থেকে দেখা যাবে।
ছাদে যেয়ে পাশাপাশি বসে দু’জন কথা বলতে থাকে অবশ্য আজ সুতা বেশী বলছে। হঠাৎ করেই শুরু হলো শারদীয় বর্ষন। শুরুতে তেমন নয়। বুঝা যাচ্ছিল থেমে যাবে। তাই ছাদ ছেড়ে আসার কথা ভাবেনি দু’জন। তাছাড়া সুতা মুখ ফুটে বলেই ফেলল ঝিরিঝিরি বৃষ্টি তার ভালো লাগছে। তাই হয়তো ধ্রুবও চায়নি ফিরতে।কিন্তু কিছু সময় গড়াতে বৃষ্টি তার রুপ পরিবর্তন করল। অঝরে ঝরছে সে। বেশ কিছু সময় ভিজলো দু’জন।অবশ্য সে বৃষ্টিতে তর্জন গর্জন ছিলো না। ভয়ে সুতা ধ্রুবর বুকে জড়িয়ে যাবে হয়তো সেই ভয়ে।পাছে ওদের ভালোবাসা পবিত্রতা হারায় হয়তো সেই ভয়েও। হলো না কিছুই পবিত্রতার ক্ষেত্রে দুজন ই অটল ছিলো।বৃষ্টি কমতেই দুজন রুমে চলে গেলো
সব কাজ শেষ করে ওরা তিনজন একসাথেই ফিরল।যে যার স্থানে ফিরে গেলো তবে অবয়বে অসীম কষ্ট ছিলো সুতার।
কিন্তু বাধন যা চেয়ে ছিলো হলো তার উল্টো। সুতার উন্মাদনা বেড়ে গেলো। অবশ্য সুতার কথায় তার প্রকাশ নেই। শুধু নিজের সাথে নিজে হেরে যাচ্ছে তার বহিঃপ্রকাশ হলো সুতার শরীর।যথাযত চিকিৎসায়ও সুস্থতার নাম নেই। তাই বাধন “” ভাবী,তুমি ঔষধ নিয়মিত নিচ্ছো না?
“” হিম, নিচ্ছি।
“” তাওলে সুস্থ হচ্ছো না কেনো?
“”ঔষধে সুস্থ হলে আপন নিলয় ফিরব কও করে বাছা?
“” ভাবী,আরেকবার কি চেকআাপে যাবে?
“” তোর কি মত?
“তোমার ইচ্ছে।
“” খুব ভালোবাসিস আমায়? তাহলে কিন্তু বেশি দিন ধরে রাখতে পারবি না। বেশি ভালোবাসা দ্রূত হারায়।
“” I am sorry vahbi আমি বোধহয় তোমার আরো ক্ষতিই করলাম।
“” বোকা, আমিতো ওকে দেখতেই চেয়েছিলাম, স্বস্তির জন্য। জানিস বাধন, ও না সরি বলেছে। যাতে ওকে আরো মহৎ মনে হচ্ছে ভুলতেই পারছি না!! চেষ্টার অবশ্য কমতি করছি নারে।সারাক্ষণ কোলাহলে থাকছি। নিরবতাকে আজ কাল বড্ড ভয় লাগে!!
“” ভাবী!
খাবার দিবো?
“” তোমার কি হাল করেছো। এভাবে চললে তুমিতো—
“” চিরন্তন সত্যকে কি করে উপেক্ষা করি বল?আমি সামান্য সুতা যার বাধনে তোর আর আমার বাধনটাই পোক্ত মাত্র। যা ফ্রেশ হয়ে নে খাবার দিচ্ছি।
এভাবে কাটল বেশ ক মাস। দিন দিন শরীর অবনতির দিকে।অবশ্য এর মাঝে ধ্রুব সাথে আর দেখা হয়নি কথা হয়েছে কয়েকবার। কখনো ধ্রুব ফোন দিয়েছে কখনো সুতা।তবে প্রথম দিক ধ্রুব বেশি দিয়েছিলো ফোন আর এতেই সুতা অপক্ষমান হয়ে ওঠে। তবুও নিজেকে আটকবার চেষ্টা চলে নিজের কাছে নিজেকে ছোটো মনে হওয়ার ভয়।দুজনেই পিছালো ধীরে ধীরে। কিন্তু সুতা যেনো এমনটা চায়নি। ও ধ্রুবর অপেক্ষাটা অভ্যাসে নিলো। সংসার সেটা কিন্তু চলছে। বর তার কোনো খেয়াল নেই ওর শরীরের প্রতি। এর মাঝে হঠাৎ এক রাতে সুতার শরীর খারাপ করল সবাই ছুটে এলো। বেশ কিছুক্ষন সবাই ওর অবস্থা নিয়ে কিছু প্রাসঙ্গিক কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা শেষে যে যার রুমে গেলো। বাধন শুধু ওর পাশে।বর সে ও শুয়ে পরল কাল অফিস আছে এই তাড়া তার।সুতার কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছিলো তার মাঝেও বাধনের হাত ধরে””বসে থাকিসনা অনেক রাত হয়েছে।শুয়ে পর শরীর খারাপ করবে।
বাধনের চোখ গড়িয়ে জল পরছে ওর খুব কষ্ট হচ্ছে সুতার জন্য। ও সুতার মাথায় হাত বুলিয়ে “” তুমি ঘুমাও আমি হাত বুলিয়ে দেই।
“শোন, আমি চলে গেলে ওকে সাথে সাথে জানাবি না। পাছে লোকে ওর অবয়বে তোর ভানীকে মন্দ বলে।”
আর বলতে পারছিল না। তাই বাধন “” চুপ করো ভাবী, খুব কষ্ট হচ্ছে? চলো হসপিটাল ৷
ধারাবাহিক…চলবে
আরো পড়ুন
সুতার বাধন প্রতি রাতের কান্না পর্ব-৬