আশরাফুল ইসলাম
কলকাতার আন্তর্জাতিক কবি সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব! একজন কবি, সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী (বাংলাদেশী) অন্যজন কবি, দার্শনিক ও সমাজসেবিকা (ভারতীয়)
দুজনই বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছেন।
চৈতালিরর দীর্ঘ নয় বছর পর দেখা হল আসিফের সাথে! চৈতালি ও আসিফ দুজনের মধ্যে গড়ে উঠেছিল সুসম্পর্কও গভীর ভালোবাসার সেতু বন্ধন!
হঠাৎ সামান্য কথা কাটাকাটি ও ভুল বুঝাবুঝি নিয়ে ব্রেকআপ হয় দুজনার মধ্যে!
দূরে সরে যায় একজন আরেকজনের কাছ থেকে।
দুজন দুই প্রান্তে থাকলেও হৃদয়ের আকুলতা ও আত্মার সম্পর্ক থেকে কেউ কাউকে সরাতে পারেনি।
এজন্যই হয়তো প্রকৃতি তাদের দীর্ঘ নয় বছর পর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিয়েছে!
কতটা বছর পর আসিফ চৈতালি কে দেখলো! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তাকালো চৈতালীর দিকে! ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল চৈতালি! সে মাথা তুলতে পারছে না, খানিক সময় এভাবেই কেটে গেল,,,,,
হঠাৎ মুখ তুলে আসিফের চোখের দিকে তাকালো চৈতালি! একটু অভিমানী স্বরে বললো,,
তোমার প্রতিটি কবিতায় আমাকে নিয়ে এত রাগ অভিমান ও আক্ষেপ কেন,
আমার প্রতি তোমার এখনও কি রাগ কমেনি? আমাকে যদি তুমি সত্যিকারেই ভালবাসতে তাহলে কেন এভাবে আমাকে নিয়ে মিথ্যে লিখেছো, বলো? আসিফ মুচকি হেসে বলল,,,
তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবার পর আমার ভিতরে একটা ভয়াবহ কষ্টের দাবদাহ সৃষ্টি হয়! আমি নীরবে আগুনে পুড়তে থাকি!
ধনঞ্জয় হাজরা স্যারের কাছে গিয়ে সব খুলে বলি কিন্তু কোন সমাধান দিতে পারেননি! তিনি শুধু স্বান্তনা স্বরূপ ধৈর্য রাখতে বললেন আমায়!
তারপর আমি নিজেকে এক ঘরে করলাম, নির্বাসিত করলাম আপন সত্তাকে!
লেখালেখির মাঝে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করলাম তাতেও কিছু হল না।
পুড়তে পুড়তে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল আমার! জমাটবাঁধা ক্ষোভও বেদনার বিস্ফোরণ চলে এলো কাব্যগ্রন্থে! এভাবেই সৃষ্টি হল “সন্ধ্যাবাতির দীপ্তশিখা” কাব্যগ্রন্থটি!
চৈতালি আর কথা বাড়ালো না শুধু বেদনার গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখল জীবনের প্রথম প্রিয় মানুষটিকে!
জীবনের চোরাবালি কত কিছুই হারিয়ে গেছে দুজনার, সময় এভাবেই চলে যায় জীবন থেকে।
জীবনের অনেক কিছুই হয় যার কোন হিসাব নিকাশ থাকেনা তাই হৃদয়ে একটা সুঁইফোটা কষ্ট বয়ে বেড়াতে হয় সারা জীবন!
মানুষের জীবনে যেন জলছবির মত
ভেসে বেড়ায় সব স্মৃতি ! আসিফ ও চৈতালীর ভালোবাসা ছিল বিস্ময়কর! ঝগড়া, মান -অভিমান চরমে উঠতো দুজনার!
আবার খানিক বাদেই মুগ্ধতা প্রকাশ পেত! কালবৈশাখী ঝড় এসে দুজনকে হঠাৎ আলাদা করে দিল। দুজনের মাঝখানে নির্মিত হলো সীমান্তের দেয়াল! হৃদয়ের গভীরতা মেপে
দেখার সুযোগ হয়নি কখনো শুধু মাত্র এই দেয়ালটির জন্যই! দুরত্ব দিন দিন বেড়ে গেল।
সম্মেলন শেষে চৈতালির কাছে এগিয়ে গেল আসিফ, চৈতালির মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলো! চৈতালি নিজেকে ধরে রাখতে পারলোনা ঝাঁপিয়ে পড়ল আসিফের বুকে!
হাউমাউ করে কাঁদছে চৈতালি!
আসিফের হাত তখনও চৈতালির মাথার উপর!