সম্পাদনায় : বাতায়ন24 ডেক্স
যষ্টিমধু হচ্ছে গ্লাইসাইররিজা গ্লাবরা গাছের শিকড়। বাংলায় গাছটিকে যষ্টিমধু গাছ বলা হয়ে থাকে।
যষ্টিমধুর শিকড় থেকে মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়। এটি লিগিউম জাতীয় বিরুৎ যা মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন অংশে পাওয়া যায়।
মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের অনেক দেশে চকোলেট এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার প্রস্তুতিতে যষ্টিমধু ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে যষ্টিমধু ঔষধি উদ্ভিদ নামে পরিচিত। এটি উদ্ভিদগত ভাবে গোমৌরি, স্টার অ্যানিস বা মৌরির সাথে সম্পর্কিত নয় যা অনুরূপ স্বাদযুক্ত মশল্লার উৎস।
যষ্টিমধু আয়ুর্বেদিক ঔষধ প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।তবে অধিক পরিমাণে যষ্টিমধু একদিনে খেলে গ্লাইসাররিজিনিক এসিড রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং মাংসপেশী দুর্বল করে দেয় ও হাইপোক্যালেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিবরণ
দোকানে বিক্রি হওয়া যষ্টিমধু এটি একটি ভেষজ বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যা উচ্চতায় ১ মিটার (৩৯ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এর পাতাগুলি প্রায় ৭–১৫ সেমি (৩–৬ ইঞ্চি) দীর্ঘ।
ফুলগুলি ০.৮–১.২ সেমি (১⁄৩–১⁄২ ইঞ্চি) লম্বা, বেগুনি থেকে ফ্যাকাশে নীল বর্ণের হয়। ফলটি একটি বিভাজক পড,
২–৩ সেমি (৩⁄৪–১ ১⁄৮ ইঞ্চি) দীর্ঘ, বেশ কয়েকটি বীজ সমন্বিত । শিকড় স্টলোনিফেরাস হয়।
যষ্টিমধুর বেশিরভাগ মিষ্টতা আসে গ্লাইসারাইজিন থেকে যষ্টিমধুর মূলের সুগন্ধটি আছে একটি জটিল যৌগ থেকে যার উদ্বায়ী অংশের ৩% থাকে অ্যানথোল।
যষ্টিমধুর বেশির ভাগ মিষ্টতা গ্লাইসারাইজিন থেকে আসে। যার মিষ্টি স্বাদ চিনির ৩০-৫০ গুণ বেশি। তবে এর মিষ্টি স্বাদ চিনি থেকে খুব আলাদা,
তাতক্ষণিক কম এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। যষ্টিমধু মূলে পাওয়া আইসোফ্লাভিন গ্লাব্রেন এবং আইসোফ্রাভিন গ্লাব্রিডিন হচ্ছে ফাইটোএস্ট্রোজেন।
চাষাবাদ এবং ব্যবহার
যষ্টিমধু সূর্যের আলো পায় এমন শুকনো উপত্যকায় ভালো জন্মে। রোপণের দুই থেকে তিন বছর পরে শরৎকালে ফসল তোলার উপযুক্ত হয়।
যষ্টিমধু উৎপাদনকারী দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ইরান, ইতালি, আফগানিস্তান, চীন, পাকিস্তান, ভারত, ইরাক, আজারবাইজান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং তুরস্ক।
তামাকে ব্যবহার
আমেরিকান সিগারেট, আর্দ্র নস্যি, চাবানোর তামাক এবং পাইপ তামাক এর স্বাদ বাড়াতে এবং আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য বেশির ভাগ যষ্টিমধু তামাকের স্বাদের উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। লিকারিস বা যষ্টিমধু তামাকজাত পণ্যগুলিকে প্রাকৃতিক মিষ্টি স্বাদ সরবরাহ করে।
গত কিছু বছর আগে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন সিগারেট থেকে মেনথল ব্যতীত অন্য স্বাদ নিষিদ্ধ করে।
খাদ্য এবং মিষ্টান্ন
বিভিন্ন ধরনের ক্যান্ডি বা মিষ্টিতে লিকুইরিস ব্যবহার করে ব্যতিক্রম স্বাদ প্রদান করা হয়। বেশির ভাগ ক্যান্ডিতে অ্যানিসিড তেল দ্বারা স্বাদ জোরদার করা হয় তাই যষ্টিমধুর উপাদান কম থাকে। লিকুইরিস কনফেকশনগুলি প্রাথমিক ভাবে ইউরোপের গ্রাহকরা কিনে থাকে, তবে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মতো অন্যান্য দেশেও এটি জনপ্রিয়।
গবেষণা
গ্লাইসারাইজিনের বৈশিষ্ট্যগুলি প্রাথমিক গবেষণার অধীনে রয়েছে, যেমন হেপাটাইটিস সি বা সোরিয়াসিসের সাময়িক
চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে ২০১৭ সালের নিম্নমানের গবেষণা সুরক্ষা সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌছাতে বাধা দেয়।
নিয়মিত আরো নতুন নতুন উদ্ভিদ সম্পর্কে জানতে চোখ রাখুন সাহিত্য পত্রিকা বাতায়ন24 এ আর শেয়ার করুন প্রিয়জনকে জানাতে।