মমিনুল ইসলাম, মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে রোটা ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
আবহাওয়া পরিবর্তন অর্থাৎ শীতের প্রকোপেই রোটা ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য হাসপাতালের চিকিৎসকদের।
মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ২শ থেকে ২শ ৫০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা-সেবা নিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।
হাসপাতালের দেয়া এক তথ্যে জানা যায়,চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের শুরু থেকে শীতের মৌসুম শুরু হওয়ায় রোটা ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২শ থেকে ২শ ৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী রুগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গড়ে প্রতিদিন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২শ ৫০ জন।
১৯ জানুয়ারী মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের কক্ষ গুলোতে ডায়রিয়া রোগীতে ঠাসা। পর্যাপ্ত বেডের অভাবে রোগীদের বারান্দায় বিছানা বিছিয়ে রোগীদের চিকিৎসা-সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে তথ্য মতে, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর জেলা সদর, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর, কুমিল্লা জেলার বরুড়া, ব্রাহ্মবাড়িয়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা সদর, কুমিল্লা সদর উত্তর, দাউদকান্দি, শরীয়তপুর জেলার বেদেরগঞ্জ, নারিয়া, দেবিদ্বার, হোমনা, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, মুরাদনগর, নাঙ্গলকোট, তিতাশ উপজেলা, কক্সবাজার সদর, ফেনী, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্ডিয়া, লক্ষীপুর জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সোনাইমুড়ি ও সখিপুর উপজেলা থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা-সেবা নিচ্ছে।
আইসিডিডিআরবির সিনিয়র মেডিসিন অফিসার ডা. চন্দ্র শেখর দাস এই প্রতিবেদককে জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে ডায়রিয়ার রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি শীতকালীন ডায়রিয়া। ভাইরাসজনিত কারণে, দূষিত খাবার ও দূষিত পানি পান করা, ময়লা মুখে দেওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এসব রোগীদের নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে সুস্থ্য করে তুলতে চিকিৎসকরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট রয়েছেন। প্রতিদিন ডাক্তার,সিনিয়র নার্স ও স্বাস্থ্য সহকারীরা ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা-সেবায় নিয়োজিত থাকেন।
আইসিডিডিআরবির সিনিয়র মেডিসিন অফিসার ডা. চন্দ্র শেখর দাস এই প্রতিবেদককে আরো জানান, ভর্তি হওয়া রোগীদের সুস্থ্য হয়ে উঠতে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। শূণ্য থেকে ছয় মাস বয়সী শিশুদের পরিমান মতো খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো, ৭ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের পরিমান মতো খাবার স্যালাইন, একটি করে বেবিজিংক ট্যাবলেট এবং বাড়তি খাবারের মধ্যে সুজি, খিচুরি, ডাবের পানি, চিড়াসহ তরল খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।