নাজমুল ইসলাম সজীব
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছে বলে তা সবাই জানে।আসলে সেটা শুধু ভাষা আন্দোলনই ছিলো না বরং অধিকার আদায়ের আন্দোলন ছিলো।
পাকিরা যখন অধিকার আদায়ের জন্য একের পর এক বাংলা দখল করতেছিলো,বাঙ্গালীদের অধিকার,স্বাধীনতা হনন করে স্বার্থ লাভ করতে চেয়েছিলো ঠিক তখনই বাঙ্গালীরা চেপে ধরেন পাকিদের।ভাষা নিয়ে সাড়া জাগলেও আসলে তা ভাষা নিয়ে আন্দোলন হয় নি।মূলতঃ, দেশের জনগণের ন্যায্য অধিকার পাকিদের নিকট হতে আদায় করতে চেয়েছিলো।তা পাকিরা মেনে নিতে পারেনি।কেননা, এদেশকে তারা তাদের অর্থনৈতিক ও স্বার্থ লাভের জন্য কেন গোলাম হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলো।ত হতে দেয়নি বাঙ্গালী বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এতেই তারা ফুঁসে ওঠে। বাঙ্গালীর ভাবনা,চেতনা,আন্দোলন দেখে তারা বুঝতে পারলো যে যুদ্ব করে তাদের বধ করে আবার স্থানে বসতে হবে।কিন্তু যুদ্ব করেও রেহাই পেলো না পাকিরা।সেটা ছিলো ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। বায়ান্নর পর থেকে একে একে বেশ কয়েকবার বড়াকারে হামলা করেও সফল হতে না পেরে তারা ভাষা আন্দোলন থেকে সরে যায় ও পরবর্তীতে গণহত্যার মাধ্যমে শুরু করে অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ব।তার বিরুদ্ধে বাঙ্গালীরা পাকিদের নিকট হতে মুক্ত হওয়ার জন্য যে যুদ্ব শুরু করে তাই মুক্তিযুদ্ধ নামে অভিহিত হয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের জন্য যে ৫২ এ যুদ্ব হলো।শহীদ বীর হাতিয়ার।বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে স্থাপন করলো। মুক্তিযুদ্ধের পরেও কিছু কিছু বৈদেশিক ভাষা লক্ষ্য করা যায় বাংলা ভাষায়।তবে তা কেন? সেই বৈদেশিক ভাষাগুলোর আগমন ঘটেছে পাকিদের আগমনেরও বহু পূর্বে।তাই সেগুলোর প্রতি তেমন নজর বুলাচ্ছেন না ভাষা বিশেষজ্ঞগণ।
তারা মনে করেন যে উর্দু ভাষা বিলুপ্ত করার নামই ছিলো ভাষা আন্দোলন। আমি মনে করি যে ভাষা আন্দোলন বলতে আমাদের দেশে বাংলা ভাষা ব্যতিত অন্য রাষ্ট্রের ভাষার আগমন ঘটবে না ও অন্য রাষ্ট্রের যে ভাষাগুলোর পূর্বে আগমন ঘটেছে,সেই ভাষাগুলো বাংলায় অনুবাদ করে বাংলা ভাষায় সংযোজন করা।প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে সকল পাঠ্যপুস্তকে প্রকৃত বাংলা ভাষা স্থাপন করে সংশোধন করা।বর্তমানে যে পরিমান বৈদেশিক ভাষাগুলো আমাদের মাঝে বিচরণ করতেছে।এতেই আমরা আমাদের ভাষার প্রকৃতভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি ও শিখিনি।তাই আজও বৈদেশিক ভাষা বাংলা ভাষা হিসেবে আমাদের মাঝে বিচরণ করেই চলেছে।তাই আজও প্রকৃত ভাষা থেকে দূরে অবস্থান করছি।
কেদারাকে চেয়ার বলছি
থলেকে ব্যাগ বলছি
প্রেক্ষাগৃহকে অডিটোরিয়াম বলছি
এমন আরোও অসংখ্য শব্দ আছে যার ব্যবহার আমরা জানি না।
অডিটোরিয়াম বললে সবাই চেনে কিন্তু প্রেক্ষাগৃহ বললে তেমন কেউ চিনে না।বাঙ্গালী হয়ে বাংলা ভাষাটাই যদি আয়ত্ত করতে না পারি তাহলে বাংলা ভাষা মর্যাদা হারালো বলেই চলে।বাংলা ভাষার জন্য যারা আন্দোলন করে শহীদ হলো তারা মূল্যায়ন পেলো না বলেই মনে হচ্ছে।তাদের মূল্যায়ন করতে শিখিনি আমরা।দুঃখের সাথে বলতে হয় যে মূল্যায়নটা যে কী তা ই জানি না।
তাহলে তো বাংলা ভাষার এমন হবেই
বাংলা আমার মাতৃভাষা
বাংলা আমার ধন
বাংলা ভাষায় কথা বলি
খুলে আমার মন।
মন খুলে স্বদেশী মানুষের সাথে কথা বলতে গিয়ে যদি বাংলাতে না বলে হ-য-ব-র-ল ভাষা ব্যবহার করি তাহলে নিজের সুনাম,সম্মানটুকুই বিকিয়ে দিচ্ছেন বলে মনে হয়।
বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ও সাবেক পরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মণির বাসায় ২০১৬ তে যখন ছিলাম,সখের বসতো একটি পিক তুলবো বলে ইচ্ছে পূষন করলাম।এতে শিক্ষামন্ত্রী নিজেই আমাকে সরম দিলেন যে “পিক বলতেছো যে। পিক বলতে তো কোন শব্দ নেই। ছবি শব্দ ব্যবহার করবে।পিক বলবে না।সকল ক্ষেত্রে নির্ভুল বাংলা ভাষা ব্যবহার করবে।” এতে বুঝতে পারলাম যে আমি খাঁটি বাংলা শিখতে পারিনি।আমাকে এক মন্ত্রী ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। নিজেকে সংশোধন করার ইচ্ছে জাগ্রত হলো।
তাই আবারো বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মণির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে শুদ্বাচার মেনে চলার ক্ষেত্রে সকলকে জানান দেওয়া ও আহ্বান করা। বাংলায় সকল শব্দ বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হোক।আপনি যে কষ্ট করে আমার লেখাটি পড়েছেন,আপনার প্রতি আমার অনুরোধ যে আপনি বাংলা ভাষার সকল শব্দ বাংলায় প্রকাশ করতে শিখুন এখন হতে।
বাংলা ভাষাকে সম্মান করতে শিখুন।মূল্যায়ন করতে শিখুন।বাংলা ভাষাকে মনে প্রাণে ভালবাসুন।
সকল বিষয়ে শুদ্বাচার মেনে চলুন।আপনার জীবন হয়ে উঠবে পরিপূর্ণ। আপনিই হবেন আপনার কর্ণধার। নিজেকে ভালবাসুন। সকল ক্ষেত্রে নিজের প্রতি আস্থা রাখুন।