রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধিঃ
মানুষের জীবন যেমন ক্ষণস্থায়ী তেমনী ক্ষমতাও স্থায়ী নয়। প্রবাদবচনের মতো আজ যিনি রাজা কাল তিনি হতে পারেন ফকির।
এক সময়ের দোর্দন্ড প্রতাপশালী বিএনপি নেতা ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাভ্যন্তরে মালির দায়িত্ব পেয়েছেন। দামি গাড়ি- বাড়িতে বিলাসী জীবন ছিল তার। ছিল ক্ষমতার দোর্দন্ড প্রতাপ। কিন্তু এখন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ফুল বাগিচা দেখভাল করে কাটছে তার নিঃসঙ্গ কারাজীবন।
শারীরিক অক্ষমতাসহ নানান দিক বিবেচনা করে তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারাগারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।
২০২০ সালের ৯ নভেম্বর অর্থ আত্মসাতের একটি দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ পান কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব কামাল। একদিন বাদে অর্থাৎ ১০ নভেম্বর থেকেই শুরু হয় তার কারাজীবন।
বিএনপির নেতা আহসান হাবিব কামালকে গত ৯ নভেম্বর ৪৫ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। কামালের সাথে সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল ইসলামসহ আরও ৫ জনকে এই সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত। বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালে একটি ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অপরাধে তাকে তাকে এ কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে
ওই মামলায় সাবেক মেয়র কামাল ও জাকির হোসেন নামে এক ঠিকাদারকে ১ কোটি টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, সশ্রম কারাদণ্ডের মানে হলো ওই বন্দি কারাগারে বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার কাজ করবেন। দুর্নীতি মামলায় কারান্তরীণ আহসান হাবিব কামাল শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ এবং তার হার্টে সমস্যা ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, ডায়াবেটিস ও পায়ে নানান সমস্যায় ভুগছেন। শারীরিক এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাকে গত ১০ নভেম্বর থেকে কারাগারের বাগান রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত করা হয়েছে।
অপর একটি সূত্র জানায়- কারা কর্তৃপক্ষ বিএনপি নেতাকে মালি হিসেবে নিযুক্ত করার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে জেলখানার মধ্যে অন্যান্য কয়েদিদের সাথে না রেখে ভিন্ন একটি সেলে রাখা রেখেছে।
তবে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রূপন অভিযোগ করেছেন, তার বাবা সাবেক মেয়র হলেও কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়নি। এবং দীর্ঘ ২ মাস পরিবারের কোনো সদস্যদের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। রাখা হয়েছে সাধারণ কয়েদীদের মতো।