তানভীর আহমেদ
বাংলাদেশে জাতির জনকের মৃত্যু দিবস ১৫ই আগষ্ট আর তাই শোক দিবস পালিত হচ্ছে মহাসমারোহে।
আর সূর্যাস্তের পর এ দিবসের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচী শেষ হয়ে যাবে। সারা দিন অনেক নেতা নেত্রী কর্মী বক্তা বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে হাজার অভিব্যক্তিতে শোক জ্ঞাপন করেছেন মঞ্চে মাইক্রোফোন হাতে।
বঙ্গবন্ধুকে নানাভাবে মূল্যায়ণ করেছেন, মূল্যয়ন করেছে তার জীবনের কাজকে। আবার এরই মাঝে নব্য আওয়ামী ও অতি আওয়ামীদের কর্মকাণ্ড হাসির খোরাক তৈরি করেছে জ্ঞান সল্পতার কারনে।
বর্তমান সময়ে যারা বঙ্গবন্ধুকে চিনে না, জানে না তার জীবন সম্পর্কে, দেখেওনি তাকে কখনও তাহলে তারা কি তার কাজ ও আদর্শকে সঠিক উপস্থাপ করতে পেরেছে সময়ের সাথে।
আর যারা তার নীতি ও আদর্শ সম্বন্ধে সম্পূর্ন অজ্ঞ তারাও আজ টেবিল চাপড়ে তাকে মূল্যায়নে মহাব্যস্ত, তার স্মৃতিচারণে দূর্মূল্য সময় কাটাচ্ছেন উচ্চস্বরে।
তাদের সমিপে আমার বিনীত নিবেদন হল, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ দেখে তার প্রতি অনুরাগি হয়েছেন বা হয়েছিলেন তারা কেন এই জাতীয় অনুষ্ঠানে তাঁর সুমহান শিক্ষা ও আদর্শের কথা বলেন না? কেন তারা বঙ্গবন্ধুর সঠিক আদর্শের প্রচার করেন না, কেন তার কাজকে যখন প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় তখন তারা প্রতিবাদ করেন না, সেই স্বল্পবুদ্ধির মানুষগুলোর বিরুদ্ধে।
সত্যি কথা হল এই প্রতিবাদহীনতা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় লজ্জাজনক আর অপমানকরও বটে।
ধর্মের নামে আজ যারা ধান্ধাবাজী করেন এই মানবতার অগ্রদূত নেতার মৃত্যুদিবসে তার দেয়া সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা কেউ কেন বলেন না?
এত ভয় কিসের? কেন তারা চুপ থাকেন প্রমানিত বিষয় জেনে বুজে!
তবে কি ভাবা যায় যে তারাও চায় এর তার কর্ম ও দর্শনের অপপ্রচার।
এখনই সময় সত্য প্রকাশের।
বঙ্গবন্ধু আদর্শগত ও ব্যক্তিগতভাবে কখনো ধর্মবিরোধী ছিলেন না,এই কথা যেমন সত্য ও বাস্তব তেমনি তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন তাও সত্য, আর তার সাথে চলা লোকেরা খুব ভাল করেই জানেন বা জানতেন।
কেননা বঙ্গবন্ধু খুব ভাল ভাবেই জানতেন যে, ধর্ম হচ্ছে অতি পবিত্র জিনিস যা মানুষের বিশ্বাসের চূড়ান্ত রুপ।
কিন্তু যারা আজ ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে রাজনীতি ও কূটনীতি করে তাদের বিপক্ষে তিনি ছিলেন সব সময় এক ক্ষুরধার নগ্ন তরবারী।
স্বাধীনতা পরবর্তি তার স্বল্প সময়ের শাসনামলে তিনি কোন ধর্মব্যবসায়ীদের কাউকে নিজের ধারে কাছেও ভিড়তে দেননি এর প্রমান পাওয়া যায় তার কর্ম ও জীবনাচরনে।
তার বিশ্বাস ছিল ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে এদেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার,আর তাই তো তিনি তা পালনে অঙ্গিকারাবদ্ধ ছিলেন আমৃত্যু এবং সকল মানুষের সাংবিধানিক অধিকার তিনি নিশ্চিত করতে সচেষ্টও ছিলেন,তাই আজ একথা স্পষ্টভাবে বলা একান্ত প্রয়োজন।
তাহলে একটি প্রশ্ন জাতি সব সময় অন্ধকারে থেকেছেন আসলে কি বঙ্গবন্ধু ধর্ম নিরপেক্ষ ছিলেন না কি ভিন্ন চিন্তাধারার? সর্বপরি তা সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাওয়ার অপচেষ্টার নামান্তর হয়েছে প্রতিটা মূহুর্তে।
তাই এখনই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঠিক চিন্তা আদর্শ ও কাজ সমূহ আগামি প্রজন্মের সামনে উপস্থান করা, না হলে পরবর্তি প্রজন্ম যখন বিকৃত ইতিহাস থেকে তার সম্পর্কে জানবে তখন তারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নেতিবাচক মানসিকতা পোষন করবে এবং তা হবে জাতি হিসাবে আমাদের জন্য লজ্জাজনক অধ্যায়ের জ্ঞানহীনতা।