শেখ হোসনা
ধারাবাহিক
আজো মাঝ পথে আসতেই দেখা দিলো আরেক বিপত্তি। একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। যার সামনে পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই এক ভদ্রলোক বসা।যার দাঁড়ির বয়স সেভের পর ৫-৬ দিন।মাথার চুল দুর দূরান্তে কয়েকটি রং পরিবর্তন করা।অবশ্য দাড়ি পুরোটাই শ্বেত বর্ণের দখলে। দেখতে মন্দ নয় তেমন একটা। স্বভাবটাও অতো মন্দ দেখাচ্ছে না।চেয়ারে বসে নির্দেশ আকারে দুজনার সাথে কথা বলছে। হয়তো ওরা সে ভবনের কর্মচারি হবে। বেশভুষা তাই দেখাচ্ছে। এবং এটাও বুঝা গেলো,, ঐ ভদ্রলোক টি কনট্রাক্টর টাইপের কিছু হবে।
তো,, শুভ্রাতো বন্ধুদের নিয়ে ওর স্বভাব মতোই হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলতে বলতে প্রায় লোকটির সীমানার কাছাকাছি আসতেই ভদ্রলোক ঠিক শুভ্রার দিকেই তাকিয়ে রইল পলক অনড় রেখে। তা দেখে অবশ্য তার সামনে দাড়ানো দুজন মুখ চেপে চেপে হাসছিল। শুভ্রার সেসব দেখার সময় নেই। সে তার কথায় ব্যস্ত।খেয়াল করল বন্ধু তন্নি এবং খব মজা নিয়ে বলল”শুভ্রা, এই শুভ্রা,আরে দেখনা ঐ লোকটাতো তোকে খেয়ে ফেলছে।
শুভ্রা অবাক হয়ে মাথা তুলে “” কই?ওহ,খাচ্ছেনা দেখছে।

পিংকি ফোড়ঁন কেটে””এটা দেখা নয়গো খাওয়াই বলা চলে। আমি ললি পপ বা গলদা চিংড়ি না বুঝলি? ওর হয়তো আমার মতো দেখতে কোনো বোন গিয়েছে মারা নয়তো কোনো মেয়ে গিয়েছে হারা।
তন্নি হাস্য স্বরে কবিতা বললি মনে হয়।
শুভ্রা নিঃশ্বাস ছেড়ে “যেটাই বলি,দেখবি এটাই হবে।বেচারা।”
পিংকি”তুই না৷ তোর মতই ভাবছিস।দেখবি—-
“কি দেখব? গায়ের রংটা যদি সুন্দরী বলতে যা বোঝায় তা হতো তাহলে তোরা বেচারাকে ভুল বুঝলে চলতো। ফালতু পেচাল রাখ।”
বন্ধু রোমা “বেচারা? বেটা লুচ্চা টাইপ,,
“” তোরা পারিসও তার বয়সটাকে গুল্লি মারলি।
পিংকি অবগতির স্নরে”বেগম শুভ্রা আপনার অবগতির জন্য জানান যাচ্ছে এই বয়সটা-ই লুচ্চা বদমাশের সেরা বয়স!!
শুভ্রা একটু ব্যঙ্গ করে “তো আপনার যুবকরা সে৷ দলে নেই?
তন্নি” তা অবশ্য মিস নেই। তবে সংখ্যায় কম ওদের বয়সের অহংকার জাতি দাম্ভিকতা আছে বলে। “
শুভ্রা”হয়েছে, বুঝলাম, তোমরা পুরুষ গবেষক।
কথা বলতে বলতে ওরা লোকটিকে পাশ কাটাতেই লোকটি তার চেয়ারর ঘুরিয়ে ওদের পিছন দেখতে থাকে।তাই তন্নি””বেএা সত্যি৷ হাড়ে বদমাশ।
শুভ্রা কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বুড়ো একটা লোক,তাকে নিয়ে–চুপ টপিক চেঞ্জ।
বাদ দেই কি করে? তুই রোজ এই রাস্তা—
শুভ্রা”কি করবে? ভালোবাসে বলবে? সোজা বলে দিবো আপনি বুড়ো মেয়ের ভালোবাসুন।এবার চুপ।
———০——–
ওর বান্ধবীরা লোকটির ঠিক মনোভাবটাই বুঝেছিল। কিন্তু শুভ্রা ওর মতো করেই ভেবেছে।ও জীবনকে অতো জটিল ভাবে দেখেনা।ও দেখতে আহামরি নয় আবার অতোটা অপছন্দনীয়ও নয়। ওর সাথে চলাফেরার পর অনেকেই ওর প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করে। ওর বাচন ভঙির জন্য।যা সত্যি অনেকটাই সুন্দর। যাতে কোনো ইচ্ছে ঢং নেই।
———-০——–
পরের দিন কলেজ যাবে হঠাৎ লোকটির কথা মনে হতেই -ছাট চাচীর সাথে তা শপয়ার করল। অবশ্য ভয় ছিলো তাতে।তবুও বের হলো। সামনে পরীক্ষা ক্লাশ মিস করা ঠিক হবে না ভেবে।
৫মিনিটের মাথায় পৌছাল সেই ভবনের কাছে।অমনি খেয়াল সেই ভবনের দিকে। অন্যদিন অর্থাৎ আর কোনো দিন লক্ষ্য -ই করেনি সে দিকে
।আজ যেনো গতকালের ঘটনার জন্যই নজর পরল। নজর পরতেই খেয়াল করল একটি যুবক৷ দৌড়ে সেই ভবনের ভিতর গেলো।শুভ্রা এববার নিজেকে ভয়ে জড়ালো দ্রুত পা ফেলতে লাগল। কিন্তু একিঃ হঠাৎ লোকটি ওর পাশাপাশি হাটছে। ও মাথা নিচু করে জোর কদম পা ফেলছে আর ঘেমে স্যা্ঁত স্যাঁতে বুকের স্পন্দন ট্রেন গতি। কিন্তু পা সে ঢ়েনো হার মানছে এগুতে। ও কিছুর দিকেই তাকাচ্ছে না। পায়ের গতি বাড়ানোর চেষ্টা।কিছুক্ষণ পর৷ পর মুখে ভেসে উটছে বিরক্তির ছাপ কারন লোকটওর মুখ থেকে ভেসে আসছিলো আঝে বাঝে সব গানের কথা।।কলেজের কাছে আসতেই শুভ্রার বুকের স্পন্দন কমগে লাগল।সাহস যেনো ওর কাছাকাছি এলো ও ধীরগতিতে মাথা তুলল।কিন্তু একিঃ লোকটি ওর ৫-৬ গজের মাঝে নেই। সে ঐ মাঝ পথেই দাড়িঁয়ে আছে।স্বস্তির নিঃয়্বাস ছাড়ল।নিজেকে সতেজ করার চেষ্টায় কলেজে যেয়েই ওয়াস রুমে। খেয়াল হতেই তন্নি”কিরে? কি বলল? বোন, মেয়ে নাকি–
শুভ্রা ক্ষিপ্ত স্বরে যা ওর স্বভাব বিরোধী “চুপ একদম চুপ শুধুই বাজে লোকদের কথা।
বাজে শব্দটও শুনেই তন্নি বুঝে গেলো কিছু একটা হয়েছে তাই “” শান্ত হ,মাঠে বসি চল।
“” নারে, ক্লাশে চল!! সরিরে।
———-০——–
সেদিন বন্ধুরা ওর অবস্থা৷ দেখে তেমন কিছু জানতে চায়নি। ও ওদেরকে কিছুই বলেনি।কিছু দিন অথার্ৎ ৪-৫দিন কাটল।ঠিক একই কাজ করে চলছে লোকটি। তার লোকদের যেনো বলাই আছে শুভ্রা এলেই খবর দিবে। খবর পেতেই সেও এসে তার কাজ করছে অথার্ৎ গান, উড়ো বাক্য, কিছু৷ আকর্ষনীয় সংলাপ যা তার মুখে সত্যি বেমানান।শুভ্রা বাসায় কথাটি বলছে না পাছে তার ভাইরা লোকটিকে মারধর করবে কোনো দূর্ঘটনা হয়ে গেলে এই ভয়ে। কাটন শুভ্রার মানবিক দিকটিও খুব জড়ালো।ভাবছে বাজে কাজ মানুষ কতো দিন করে কয়েক দিন যেতেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু নাঃ লোকটি শুদ্রাবার নয়।তাই সে বাসায় জানাল।
জানাল, সে এ বছর পরীক্ষা দিবে না। প্রস্তুতি ভালো নয়। রেজাল্ট মন মত আসবে না।এর পরিস্কার অর্থ সে কলেজ যাবে না। জানাল বন্ধুূদের। বন্ধুদের আরো জানাল। ও যাকে চায় তাকেও বলতে পারছে না ভালোলাগার কথাটি।এমন কি সেও বলছে না নাকি বুঝতে পারছেনা। এই দুই মিলিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছিল শুভ্রা।তবুও ওর ভালেবাসা নিয়ে ওতো অস্তির ছিলো না। যতো ভয়, আতঙ্ক দিচ্ছিল ঐ বদমাশটা।
-চলবে-
আরোও পড়ুন