একই গলির দুই পাশের দুই প্রতিবেশী আমরা
আমি পূর্বে তুমি পশ্চিমে।
তোমার বাড়ির আমগাছের ডালটা
আমার ছাঁদে এসে ছায়া দেয়।
আমার ডিশ লাইনের তারটা তোমার
ছাঁদের এক কোণে সংযোগ দেওয়া।
সকাল উঠে জানালা খুলতেই
দুজন দুজনের মুখ দেখাদেখি হয়।
তুমি সিগারেটটা ধরিয়ে দুটান দিয়ে আমাকে দাও
আমি দুটান দিয়ে আবার তোমার দিকে বাড়াই।
তোমার বৌটা আমার বৌয়ের সাথে
সকালে উঠেই করে কুশল বিনিময়।
এই! তুমি তো হাসনাহেনার গন্ধ ভালোবাসো, তাই না!
আমিও তো তাই —
তুমি যে দোকান থেকে জামা জুতো প্যান্ট
তরকারী মিষ্টি কেনাকাটা করো।
আমিও তো সেই —
তুমি যে যানবাহনে যাতায়াত করো,
আমিও তো সেই —
তুমি যে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নাও,
আমিও তো সেই —–
আমাদের রক্ত মাংস মল মূত্র সবই তো এক।
তাহলে ভিন্নতা কোথায়?
ভিন্নতা হয়তো প্রকাশে,
আমার জল তোমার পানি,
আমার দিদা তোমার নানি।
আমার একাদশী তোমার রোজা,
তোমার ঈদ আমার পূজা।
তোমার কোরান আমার গীতা,
তোমার কবর আমার চিতা।
সবই একের ভিন্ন ভিন্ন রূপ।
অথচ দেখো তোমার আর আমার মধ্যে,
কত দুরত্ব, কত বিভেদ, কত মতভেদ।
জাতিতে জাতিতে কত হিংসা মারামারি কাটাকাটি।
কারণ জানো তো —
সবকিছু একই হলেও মনটা হতে পারেনি এক।
মনের নৈকট্যতা কখনও আসে নি কাছাকাছি।
সবকিছুতে এসেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া।
দুরত্ব কমে পৃথিবী হয়েছে আজ বিশ্বগ্রাম।
কিন্তু মন রয়ে গেছে যোজন যোজন দূরত্বে।
মনের দুরত্ব কমা বৈকি বরং বেড়েই চলেছে।
মন সেই পড়ে আছে —
প্রাচীন মধ্যযুগীয় অন্ধকার কক্ষে।।
হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া কলমের ছোঁয়া।
অনেক সুন্দর লেখনি।