আজম পাটোয়ারী
মডেল-আরিফুলইসলাম
আমি বুঝে গেছি পরী এই সেই পরী যার হাত থেকে আমি বাচতে চাই। কিন্তু সে নাছোড়বান্ধা অত সহজে ছাড়বেনা আমাকে আজ টার্গেট করেছে আর সুযোগ খুজছে একা পেতে। এবার আমি অনেকটা অনুরোধের সুরে নরম গলায় দোকানদার চাচাকে বলি আপনি সবই দেখছেন জানেন আর বুঝতে পেরেছেন কিন্তু আমি এখন কি করব, আমাকে তার হাত থেকে বাচান নয়তো আজ আমাকে মরতে হবে।
সে সুযোগ করে আমার গায়ে জোড় করে টান মারল, এমন সময় দোকানদার বলে তোরে বলছি সীমানা অতিক্রম না করতে, এটা ঠিক নয় একজন বিপদে পড়েছে তাকে ক্ষতি করা অধর্ম।
বাবা তুমি চিন্তা করোনা আমি দেখছি,কি করা যায়।
আর কোন কথা না বলেই দোকানসহ দু’জনে উধাও, আমি দেখি একটি খালি জায়গাতে আমি মাটিতে বসে আছি,তারা কোথায় গেল কিছুই দেখা যাচ্ছে না তো।
ভয়টা কি রকমের সেটা বর্ণনা করতে পারছিনা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি আযান দিতে বাকি মিনিট কয়েক আর তা দেখে সান্ত্বনা পেলাম,খানিক ক্ষন পর আযান শুরু হল মসজিদের মাইকে। তারপর আমি প্লাটফর্মে উঠে এসে দাড়ালাম আর আবছা অন্ধকারে রেল লাইনের দিকে দৃষ্টি করে যা দেখলাম এক বিশাল সাদা যেন কিছু একটা সামনে থাকা কি যেন ধাওয়া করছে।
সত্যি কি দেখছি আমি,যেতে যেতে তারা চোখের সীমানা ছাড়িয়ে গেল!
শরীরে জ্বর এসেছে কখন বুঝতে পারিনি,ভীষণ গরম হয়ে গেছে শরিরটা। কিছুক্ষণ পর স্টেশনের মসজিদের মাইকে আযানের আওয়াজ ভেসে আসলো, মনে কিছুটা শান্তি আসলো তারপর মসজিদে দিকে এগিয়ে গেলাম আর অজু করে নামাজের জন্য তৈরি হলাম।
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া তার রহমতে আজ বেচে গেলাম। তারপর নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বেড় হয়ে প্লাটফর্মের শেষ মাথায় গেলাম, এদিকে দু’একজন হাটতে বেড়িয়েছে দেখি কিন্তু একি ঐখানে তো কোন দোকানই নেই, তারপর দোকানদার চাচার খোজ করলাম আশে পাশে কিন্তু না সেখানে চাচা নেই! তাহলে কই গেল দোকান আর দাকানদার চাচা দাড়িয়ে ভাবছি, এমন সময় অনেকটা দূরে অন্য দোকানদারকে দেখলাম তার দোকান খুলছে।
তার কাছে গিয়ে বৃদ্ধ দোকানদারের কথা জানতে চাইলাম, তিনি আমার কথা শুনে চুপ করে রইলেন।
তারপর বললেন তাহলে তুমিও দেখেছ তাদেরকে, তবে আল্লাহ রহমতে আর করিম মুন্সির কারনে বেচে গেছ। তারপর তিনি আমাকে বললেন যে এখানকার সব ঘটনা।
যখনই কোন অমাবস্যার রাতে মাঝ পথে ট্রেনের সমস্যা হয়, তখন এই স্টেশনে একজন যাত্রী নামে আর তখনই তারা পরীর খপ্পরে পরে আর তখন সেই যাত্রীকে আমাদের এই স্টেশনের প্রথম দোকানদার করিম মুন্সি সাহায্য করে বাচিয়ে দেয়।
আমার বুজার বাকি নেই আমি আসলে কত বড় বিপদে ছিলাম রাতের বেলায়।
আমি আর সময় নষ্ট না করে দ্রুত পা চালাই অটো গাড়ির দিকে,আর মনে মনে দোয়া করি আমাকে সাহায্য করা সেই বৃদ্ধ মানুষটির জন্য।
আমার কানে এখনও বাজে সেই কথা রাত তাদের দখলে, আর তাদের জীবনাচরন তখন শুরু হয়।
-সমাপ্ত-
আরোও পড়ুন