সম্পাদনা ও তথ্য সংগ্রহ:তানভীর আহমেদ
আমরা আজ সাধারন জ্ঞানের এই পর্বে আলোচনা করব বাংলাদেশের রাজধানী ও প্রধান শহর ঢাকা জেলা নিয়ে।যদিও ঢাকা একটি বিভাগিয় শহর তথাপি ঢাকা কিন্তু একটি বহু পুরানো ঐতিহ্য স্বাক্ষী জেলাও, আর তাই আজ আমরা সর্বোত্তক ভাবে চেষ্টা করব ঢাকা জেলার সকল বিষয়াধি আপনাদের সামনে উপস্থানে যা আপনাদের প্রাচীন এই জেলা সম্পর্কে কৌতুহ নিবারনে সহায়ক হবে ।
বাংলাদেশ এর সকল বিভাগিয় প্রশাসনিক কেন্দ্র এই জেলাতেই অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত। বর্তমানে ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের সাথে সীমান্তবর্তী কোন জেলা নেই ৷ আয়তনে ঢাকা বিভাগের বৃহত্তম জেলা টাঙ্গাইল ৷
★বাংলাদেশের রাজধানী প্রাচীন এই ঢাকা মোঘল-পূর্ব যুগে কিছু গুরুত্বধারন করলেও শহরটি ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ করে মোঘলদের আমল থেকে। ঢাকা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে স্পষ্ট করে তেমন কিছু জানা না গেলেও, এ সম্পর্কে প্রচলিত মতগুলোর মধ্যে কয়েকটির নিম্নরূপঃ
★ একসময় এ অঞ্চলে প্রচুর ঢাক গাছ (বুটি ফুডোসা) ছিল এবং তা থেকে এই নামটি উৎপত্তি বলে অনেকের মতে।
★ রাজধানী উদ্বোধনের দিনে ইসলাম খানের নির্দেশে এখানে ঢাক অর্থাৎ ড্রাম বাজানো হয়েছিল তারপর থেকে এর নাম ঢাকা বলা হয়ে কারো কারো মতে যদিও সুনিদ্দিষ্ট নয়। ★’ঢাকাভাষা’ নামে একটি প্রাকৃত ভাষা এখানে প্রচলিত ছিল।
★ রাজতরঙ্গিণী-তে ঢাক্কা শব্দটি ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে অথবা এলাহাবাদ শিলালিপিতে উল্লেখিত সমুদ্রগুপ্তের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ডবাকই হলো আজকের এই ঢাকা।
★ কথিত আছে যে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে হিন্দু দেবী দুর্গার বিগ্রহ খুঁজে পান এবং তিনি দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ এলাকায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ঢাকা বা গুপ্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তাই রাজা মন্দিরের নাম দিয়েছিলেন ঢাকেশ্বরী মন্দির।
পরবর্তিতে এই মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে।আবার অনেক ঐতিহাসিকদের মতে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর যখন ঢাকাকে সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন, তখন সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ শহরে ‘ঢাক’ বাজানোর নির্দেশ দিয়েছিলেনআর এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ ধারণ করে এবং তা থেকেই এই শহরের নাম ঢাকা হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম খান চিশতি সুবাহ বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামানুসারে এই শহরের এর নামকরণ করে জাহাঙ্গীরনগর।
★ঢাকার বিখ্যাত খাবার:-
★বাকরখানি
★বিরিয়ানি হচ্ছে ঢাকার বিখ্যাত খাবার যার মুখরোচক গল্প আজও লোক মুখে প্রচলিত আছে নানা রুপে।
★ ঢাকার বিখ্যাত স্থান সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:-
*বাহাদুর শাহ পার্ক
*বলধা গার্ডেন
*ওসমানি উদ্যান ও বিবি মরিয়ম কামান
*বোটানিক্যাল গার্ডেন
*রমনা পার্ক
*ধানমন্ডি লেক
*গুলশান লেক পার্ক
*শিশুপার্ক
*শ্যামলী শিশুমেলা
*জাতীয় চিড়িয়াখানা
*লালবাগ কেল্লা
*জিনজিরা প্রাসাদ
*আহসান মঞ্জিল
*ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল
*বড়কাটরা
*ছোটকাটরা
*নিমতলীর কুঠিবাড়ি
*রোজ গার্ডেন
*তারা মসজিদ
- জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারম * জাতীয় সংসদ ভবন * এফডিসি এসব দর্শনীয় স্থান সহ আরো বহু স্থান আছে ঢাকা জেলায়।
★ ঢাকা জেলার আশেপাশে যে সমস্ত পিকনিক স্পট রয়েছে এর মধ্যে রয়েছে মৌচাক, গাজীপুর, ভাওয়াল পুষ্পদাম (পিকনিক স্পট ও শুটিং স্পট,গাজীপুর), রাজেন্দ্রপুর, মধুপুর, শফিপুর, শ্রীপুর, বোটানিক্যাল গার্ডেন, চন্দ্রা, সালনা, কুমিল্লার বার্ড, লালমাই পাহাড়, কোটবাড়ী, নরসিংদীর ড্রিমল্যান্ড পার্ক, সোনারগায়ে ঈশাখাঁর রাজধানী, ইত্যাদি স্থান উল্লেখ্যযোগ্য।
আজ তাহলে এই পর্যন্ত রইল ঢাকা জেলার পরিচিতি, পরবর্তি পর্বে থাকবে নতুন কোন জেলার নতুন পরিচিতি।