সম্পাদনায় : বাতায়ন24 ডেক্স
আমাদের বাতায়ন24 এর আজকে সাধারন জ্ঞানের আয়োজনে থাকছে,বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের পরিচিতি।
ধারাবাহিক এই আয়োজনে আজ থাকছে, রাজধানী ঢাকার প্রধান সব দর্শনীয় স্থানের বর্ননা ও পরিচিতি।
১/ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ এটি। এটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বহিপ্রাঙ্গনে অবস্থিত। প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি এখানে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়ে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে।

২/ জাতীয় স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি স্মারক স্থাপনা। এটি সাভারে অবস্থিত। এর নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণের সর্বমোট আয়তন ৮৪ একর। স্মৃতিস্তম্ভ পরিবেষ্টন করে রয়েছে ২৪ একর এলাকাব্যাপী বৃক্ষরাজিশোভিত একটি সবুজ বলয়।

৩/ জাতীয় সংসদ ভবন
রাজধানী ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের স্থাপত্য শিল্পের একটি অনন্য নিদর্শন। ১৯৬১ সালে সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা ১৯৮২ সালে শেষ হয়। স্থপতি লুই আই কানের নকশায় নির্মিত জাতীয় সংসদ ভবনের মাঝখানে রয়েছে প্রধান হল। জাতীয় সংসদ ভবনের বেসমেন্টে রয়েছে কার পার্কিং, তত্ত্বাবধায়ক এজেন্সির অফিস এবং মূল ভবনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাদির প্রদানের ব্যবস্থা। কৃত্রিম লেক পরিবেষ্টিত জাতীয় সংসদ ভবনকে দেখলে পানির উপরে ভেসে থাকা ভবন বলে মনে হয়।

সংসদ ভবনের উত্তর দিকে আছে সবুজ ঘাসের বাগান ও ইউক্যালিপটাস গাছে শোভিত প্রেসিডেন্সিয়াল স্কয়ার। সংসদ ভবনের কোথাও কোনো কলাম নেই, যেন বিশাল কংক্রিটকে খোদাই করে অসাধারণ কারুকার্যময় ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের অন্যান্য আধুনিক ভবনগুলো থেকে জাতীয় সংসদ ভবনকে দিয়েছে বিশেষ স্বতন্ত্রতা।
৪/ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
এটি পূর্বে রমনা রেসকোর্স ময়দান নামে পরিচিত ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণ এখানেই প্রদান করেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বার পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই উদ্যানেই আত্মসমর্পণ করে মিত্রবাহিনীর কাছে। ১৯৭৫ সালের পর এলাকাটিকে সবুজে ঘেরা পার্কে পরিণত করা হয়। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এখানে স্বাধীনতা স্তম্ভ ও শিখা চিরন্তন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ জনতার দেয়াল নামে ২৭৩ ফুট দীর্ঘ একটি দেয়ালচিত্র। এটি ইতিহাসভিত্তিক টেরাকোটার পৃথিবীর দীর্ঘতম ম্যুরাল।

৫/ লালবাগ কেল্লা
ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অসমাপ্ত মুঘল দুর্গ। মুঘল সুবাদার মুহাম্মদ আজম শাহ এটির নির্মাণকাজ শুরু করেছিল ১৬৭৮ সালে। শায়েস্তা খাঁর বাসভবন ও দরবার হল বর্তমানে লালবাগ কেল্লা জাদুঘর হিসেবে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

৬/ আহসান মঞ্জিল
এটি পুরনো ঢাকার ইসলামপুরের কুমারটুলী এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি পূর্বে ছিল ঢাকার নবাবদের আবাসিক প্রাসাদ ও জমিদারীর সদর কাচারি। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

৭/ হোসেনি দালান
প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো এ স্থাপনা মোগল আমলের ঐতিহ্যের নিদর্শন। এটি ১৭শ’ শতকে নির্মিত হয়। মোগল সম্রাট শাহজাহানের আমলে এটি নির্মিত হয়। দালানটি সাদা বর্ণের এবং এর বহিরাংশে নীল বর্ণের ক্যালিগ্রাফি বা লিপিচিত্রের কারূকাজ রয়েছে।

৮/ জাতীয় চিড়িয়াখানা
এটি ঢাকার মিরপুরে স্থাপিত। এটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। চিড়িয়াখানাটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। চিড়িয়াখানায় ১৩৮ প্রজাতির ২ হাজার ৬২২টি প্রাণী রয়েছে।

৯/ জাতীয় জাদুঘর
এটি শাহবাগ মোড়ে অবস্থিত। এটি ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে নৃতত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি এবং আধুনিক ও বিশ্ব-সভ্যতা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা ৪৪টি প্রদর্শনীকক্ষ (গ্যালারি) রয়েছে।

১০/ বায়তুল মোকাররম মসজিদ
ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদ। ১৯৫৯ সালে ‘বায়তুল মুকাররম মসজিদ সোসাইটি’ গঠনের মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। পুরান ঢাকা ও নতুন ঢাকার মিলনস্থলে মসজিদটির জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। মসজিদটির নির্মাণ শুরু হয় ১৯৬০ সালে, শেষ হয় ১৯৬৮ সালে। আয়তন ২৬৯৪ বর্গ মিটার। মসজিদটির স্থপতি টি. আব্দুল হুসেন থারিয়ানি। একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

১১/ তারা মসজিদ
তারা মসজিদ পুরান ঢাকার আরমানিটোলা এলাকায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত। মসজিদের গায়ে কোন শিলালিপি না থাকায় মসজিদটির সঠিক নির্মাণকাল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয় ১৮ শতকের শুরুর দিকে তৎকালীন ঢাকার জমিদার মির্জা গোলাম পীর তারা মসজিদ নির্মাণ করেন। মোঘল স্থাপত্য কৌশলে নির্মিত মসজিদটি অনেকের কাছে সিতারা মসজিদ বা মির্জা গোলাম পীরের মসজিদ নামে পরিচিত।

১২/ ঢাকেশ্বরী মন্দির
ঢাকেশ্বরী মন্দির বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি ঐতিহাসিক পুণ্যস্থান এবং জাতীয় মন্দির। ঢাকেশ্বরী শব্দের আক্ষরিক অর্থ ‘ঢাকার ঈশ্বরী’। আবার অনেকে মনে করেন, এই ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নাম থেকেই ঢাকার নামকরণ করা হয়েছে। ১২শ শতাব্দীতে সেন রাজবংশের রাজা বল্লাল সেনের মাধ্যমে এই মন্দিরটি নির্মিত হয়। যদিও তৎকালীন সময়কার স্থাপনার নির্মাণশৈলীর সাথে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের স্থাপত্যকলার তেমন মিল পাওয়া যায় না। তাই ঐতিহাসিকগণদের মতে, ধারাবাহিক সংস্কারের ফলে মন্দিরটির মূল নকশার এমন পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকেশ্বরী মন্দিরটি পাকিস্তানী বাহিনী কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে মন্দিরের মূল নকশা অনুযায়ী পুননির্মাণ করা হয়।

১৩/ অপরাজেয় বাংলা
অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নিবেদিত একটি ভাস্কর্য যা তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রায়িত করেছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত। ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি তৈরি করা শুরু হয়। এটি নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ।

১৪/ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার বা ভাসানী নভো থিয়েটার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের বিজয় সরনিতে অবস্থিত একটি স্থাপনা। এখানে নভোমন্ডল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এবং নভো মন্ডলের ধারণা পাওয়ার জন্য কৃত্রিম নভোমন্ডল তৈরি করা আছে। স্থপতি আলী ইমাম এই নভো থিয়েটারটির নকশা প্রণয়ন করেন।

১৫/ কার্জন হল
কার্জন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত প্রায় ১১৫ বছরের পুরনো একটি ঐতিহাসিক ভবন ও পুরাকীর্তি। বর্তমানে কার্জন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও জীব বিজ্ঞান অণুষদের পাঠদানে ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৯০৪ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তৎকালীন গভর্নর জেনারেল জর্জ কার্জন এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর থেকে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত কার্জন হল ঢাকা কলেজ ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হত।
ইউরোপ ও মোগল স্থাপত্য রীতির অপূর্ব সংমিশ্রণে নির্মিত দ্বিতল এই কার্জন হল ভবনকে ঢাকার অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লাল রঙা কারুকার্যময় এই ভবনের অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল একটি কেন্দ্রীয় হল। কার্জন হলের সামনে রয়েছে একটি সুন্দর বাগান। একটি চমৎকার রাস্তা পশ্চিম থেকে পূর্বে বাগানের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। ভবনের পেছনের দিকে রয়েছে প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মুসা খাঁ মসজিদ, একটি বিশাল পুকুর ও শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের মূল আবাসিক ভবন। কার্জন হলের উল্টো দিকের রাস্তার অন্য পাশে রয়েছে শিশু একাডেমি এবং ঐতিহ্যবাহী দোয়েল চত্বর।

শুধু কালের সাক্ষী হিসাবে নয় কার্জন হলের রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক গুরুত্ব। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর কার্জন হল প্রাদেশিক রাজধানীর দফতর হিসেবে ব্যবহৃত হত। ঐতিহাসিক কার্জন হল থেকেই উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ করা হয়।
১৬/ বোটানিক্যাল গার্ডেন
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান (বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম) বোটানিক্যাল গার্ডেন হিসেবে অধিক পরিচিত। মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার পাশেই বোটানিক্যাল গার্ডেনের অবস্থান। ২০৮ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে প্রায় ৮০০ প্রজাতির বিভিন্ন বৃক্ষ রয়েছে। এই সব বৃক্ষরাজির মধ্যে রয়েছে নানান ধরনের ফুল, ফল, বনজ এবং ঔষধি গাছ। বোটানিক্যাল গার্ডেনে ফুলের বাগান ছাড়াও রয়েছে পুকুর, দীঘি ও ঘাসে ঢাকা সবুজ মাঠ।

১৭/ রোজ গার্ডেন প্যালেস
রোজ গার্ডেন প্যালেস রাজধানী ঢাকার টিকাটুলিতে অবস্থিত। ১৯ শতকে হৃষিকেস দাস নামের এক হিন্দু জমিদার বিনোদনের জন্য রোজ গার্ডেন প্যালেসটি নির্মাণ করেন। তৎকালীন সময় বিত্তবান হিন্দুদের সামাজিক অনুষঙ্গ হিসাবে বলধা গার্ডেনে জলসার আয়োজন করা হত। হৃষিকেস দাস ছিলেন নিন্মবর্ণের ফলে এক জলসায় তিনি অপমানের স্বীকার হন। এরপর হৃষিকেস দাস বিনোদনের জন্য রোজ গার্ডেন প্যালেস তৈরি করেন এবং এখানেই জলসার আয়োজন করতেন। ঐ সময়ে এই বাগানবাড়ির নয়নাভিরাম সাজঘর ছিল মূল আকর্ষণ। বেহিসাবী জীবনযাপনের জন্য একসময় হৃষিকেস দাস দেউলিয়া হয়ে সম্পত্তি বিক্রি করতে বাধ্য হন।
রোজ গার্ডেন প্যালেসের এক ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। ১৯৪৯ সালে এই রোজ গার্ডেনেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। বাড়িটির নীচতলায় একটি হলরুম, আটটি কক্ষ ও করিনথিয়ান কলাম রয়েছে। উপর তলায় আরো একটি হলসহ আরও পাঁচটি কক্ষ রয়েছে। একসময় প্রাসাদ প্রাঙ্গণে একটি ঝর্ণা ছিল, বর্তমানে ঝর্ণাটি চালু না থাকলেও এর চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। প্রাসাদের সামনে বাগানে রয়েছে মার্বেলের তৈরি কয়েকটি সুদৃশ্য মূর্তি। তবে যেই গোলাপের বাগানের জন্য এই প্রাসাদটির নামকরণ রোজ গার্ডেন প্যালেস করা হয়েছিল সেই গোলাপ বাগান বর্তমানে নিশ্চিহ্ন।

ছুটির দিন ছাড়া অন্য সকল দিনই রোজ গার্ডেন দেখতে পারবেন। তবে মূল ভবনের ভেতরে ঢুকার ক্ষেত্রে আপনার পূর্ব অনুমতির প্রয়োজন হতে পারে। রোজ গার্ডেনের কাছেই রয়েছে বলধা গার্ডেন ও খ্রিষ্টান কবরস্থান। হাতে সময় থাকলে বলধা গার্ডেন এবং পুরান ঢাকার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলো দেখে যেতে পারেন।
১৮/ হাতিরঝিল
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘স্পেশাল ওয়ার্কস অরগানাইজেশন’ (এসডব্লিউও) তত্ত্বাবধায়নে পাঁচ বছর কাজ করার পর হাতিরঝিলকে গড়ে তোলা হয় বিনোদনের স্থান হিসেবে। এখানে রয়েছে সবুজের সমারোহ, ঝিলের টলটলে পানি এবং সুদৃশ ব্রিজ। হাতিরঝিলে রয়েছে নৌকা ভ্রমণের সুযোগ। তাছাড়াও পুরো এলাকা ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে চক্রাকার বাস।

১৯/ ফ্যান্টাসি কিংডম
রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ার জামগড়ায় প্রায় ২০ একর জায়গা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে ফ্যান্টাসি কিংডম থিম পার্ক। সারা বিশ্বের জনপ্রিয় এবং আধুনিক সব রাইড দিয়ে সাজানো এই বিনোদন কেন্দ্রে আছে শান্তা মারিয়া, রোলার কোস্টার, ম্যাজিক কার্পেট, লেজি রিভার, লস্ট কিংডম, প্লে জোন, ওয়াটার ফল, ডুম স্লাইড, ড্যান্সিং জোন এবং ওয়াটার কিংডম।

২০/ নন্দন পার্ক
নাগরিক জীবনের কর্মব্যস্ততার ভীড়ে অল্প সময়ের অবসরে চিত্তবিনোদনের সুযোগ তৈরি করার উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালে সাভারের নবীনগর-চন্দ্রা হাইওয়ের বাড়ইপাড়া এলাকায় নন্দন পার্ক গড়ে তোলা হয়। সবুজে ঢাকা প্রায় ৩৩ একর আয়তনের এই পার্কের রয়েছে নিরাপদ এবং আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন দেশি বিদেশি রাইড, ফাইভ-ডি মুভি থিয়েটার, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট এবং সুপরিসর কার পার্কিং সুবিধা। নন্দন পার্কের আকর্ষণীয় রাইডের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জিপ রাইড, রক ক্লাইম্বিং, র্যাপলিং, চ্যালেঞ্জ কোর্স, রোলার কোস্টার, অবস্ট্যাকল কোর্স, ওয়াটার কোস্টার, ক্যাবল কার ইত্যাদি। আর ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে রয়েছে ওয়েভ পুল, স্যুট ও ফ্যামিলি কার্ভ টিউব স্লাইড, ওয়েভ রানার, ডুম স্লাইড, মাল্টি প্লে জোন এবং ওয়াটার ফল অ্যান্ড মিস্ট।

২১/ ধানমন্ডি লেক
রাজধানী ঢাকার নাগরিক কোলাহলের ভেতরে অবস্থিত ধানমন্ডি লেক যেন এক মুঠো প্রকৃতির স্পন্দন। ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থান বলেই লেকটি ধানমন্ডি লেক নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। সবুজ গাছ আর জলের অপূর্ব মিতালী ধানমন্ডি লেককে সব বয়সী মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে। তাইতো প্রিয়জনকে নিয়ে হোক কিংবা প্রাণবন্ত আড্ডার বিকেল ধানমন্ডি লেক মুখর থাকে দর্শনার্থীদের সরব পদচারণায়। ধানমন্ডি লেকের চারপাশের উদ্যানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, হাঁটার রাস্তা, ব্যায়ামের স্থান, বসার বেঞ্চ, রেস্টুরেন্ট এবং ফাস্টফুড শপ। আর অর্থের বিনিময়ে লেকে মাছ ধরা এবং বোটে ঘুরে বেড়ানো যায়। এছাড়াও এখানে আছে বিনোদন/সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খ্যাত রবীন্দ্র সরোবর। এই রবীন্দ্র সরোবরে বিভিন্ন দিবস ও উৎসবে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কনসার্ট আয়োজন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া ধানমন্ডি লেকের কাছেই রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের বাসস্থান। আর ধানমন্ডি লেকে প্রবেশ করতে কোনরকম ফি বা অর্থ প্রদান করতে হয় না। তবে এই লেকে ভোর ৫ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা অবস্থান করতে পারে।

২২/ গোলাপ গ্রাম সাদুল্লাহপুর
ঢাকার কাছে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে সাদুল্লাপুর গ্রাম অবস্থিত। তুরাগ নদীর তীরের সাদুল্লাপুর গ্রামটিই বর্তমানে গোলাপ গ্রাম হিসাবে পরিচিত। যান্ত্রিক জীবনে অল্প সময়ের অবসরে যদি ঢাকার আশেপাশে একদিনের জন্যে কোথাও ঘুরতে চান তবে গোলাপ ফুলের রাজ্য থেকে ঘুরে আসতে পারেন। নানা রঙের গোলাপ ফুল দিয়ে ঘেরা সমস্ত সাদুল্লাহপুর গ্রামটিকে একটি বাগান মনে হয়। এখানে সাধারণত মিরান্ডি জাতের গোলাপে চাষ বেশি হয়। গ্রামের বুকের উপর দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার দুপাশের বিস্তীর্ণ গোলাপের বাগান সারাক্ষণ মোহিত করে রাখবে। সাদুল্লাহপুর পুরো গ্রামে আপনি গোলাপের সৌরভ পাবেন। এখান থেকে চাইলে পছন্দমতো গোলাপ কিনে নিতে পারেন। তবে এরা সাধারণত খুচরা গোলাপ বিক্রি করতে চায় না। তাই এদের কাছ থেকে আপনাকে ১০০ এর বেশি গোলাপ কিনতে হবে।

২৩/ মৈনট ঘাট
দোহার উপজেলার মৈনট ঘাট কে ডাকা হয় মিনি কক্সবাজার নামে। ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে সোজা একটি রাস্তা এসে মিলেছে দোহারের মৈনট ঘাটে। পদ্মার এক পাড়ে দোহার আর অপর পাড়ে ফরিদপুর। মৈনট ঘাট থেকে মানুষ পদ্মা পাড় হয়ে ফরিদপুরের গোপালপুর যায়। ঘাটের পূর্ব পাশে বিশাল চর মানুষকে সাগরের বেলাভূমির কথা মনে করিয়ে দেয় আর সামনের বিস্তীর্ণ পদ্মা হয়ে যায় সাগর। আর চাইলে এখান থেকে নৌকায় করে পদ্মা নদীতে ঘুরে বেড়ানো যায় কিংবা পাড় ধরে হাটা যায় ইচ্ছে মতো।

আরো নতুন নতুন বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন ও বন্ধুদের জানতে শেয়ার দিন সাহিত্য পত্রিকা বাতায়ন24।