সম্পাদনায় : মেহজাব আহমেদ প্রবাল
রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভা জমজমাট। এদিকে তখনও গােপাল আসেনি। মহারাজ ঘোষণা করলেন,আপনাদের মধ্যে যে গোপালের বাড়ি থেকে কিছু চুরি করে আনতে পারবে তাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।
গোপালের ঘরে চুরি! অসম্ভব! কেউ এই প্রস্তাবে সম্মত হলেন না। সভায় উপস্থিত এক লোভী দরিদ্র ব্রাহ্মণ পুরস্কারের লোভে সম্মত হলেন।
সেই দিনই রাতে সিঁদ কেটে তিনি গোপালের ঘরে ঢুকলেন।
গোপাল সব ব্যাপারটা আগেই কারো কাছ থেকে জানতে পেরেছিল।
তাই অতি লোভী ব্রাহ্মণকে বেশ ভালোভাবে নাকাল করার লোভ সামলাতে পারল না গোপাল।
মহারাজের অনুগ্রহে মোহরের অভাব ছিল না গোপালের।
এদিকে বিকেলে এক কলসী মল সে পূর্বেই সংগ্রহ করে রেখেছিল একজন মেথরকে দিয়ে।
রাতে সজাগ হয়েই ছিল গোপাল। সিঁদ কাটার শব্দ শুনে কলসীটি ঘরের মধ্যে এনে তার ওপর কয়েকটি মোহর সাজিয়ে রাখল।
আর ব্রাক্ষন সিঁদ কেটে যখন সবে মাথাটি তুলেছে তখন চুপিসারে গোপাল তার টিকিটি কেটে নিল।
ব্রাহ্মণ ঘরে ঢুকেই সামনে মােহরের কলসীটি দেখতে পেয়ে খুব খুশি হয়ে গেল।
তাই সে আর সময় নষ্ট না করে মনের আনন্দে সেই কলসীটি মাথায় করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
গোপালও সহজে ছাড়বার পাত্র নয়, সেও ব্রাহ্মণের পিছন পিছন চলল। ব্রাহ্মণ যখন রাজসভায় ঢুকতে যাবে তখন গোপাল পিছন থেকে একটি ইটের টুকরোব্রাহ্মণের মাথায় বসানো কলসী লক্ষ্য করে, ঢিল ছুঁড়তেই কলসীটি ভেঙে গেল আর সমস্ত মল ব্রাহ্মণের মাথায় গায়ে মাখামাখি হয়ে সে এক বীভৎস ব্যাপার হল।
গোপাল মহারাজকে বলল, দেখুন মহারাজ চোরের শাস্তি! মহারাজ সেই দৃশ্য দেখে আর সেখানে থাকতে পারলেন না, নাকে কাপড় দিয়ে পালালেন।
ব্রাহ্মণও লজ্জায় ঊধ্বশ্বাসে নদীর দিকে ছুটলেন।
মনে খুবই ব্যথা পেলেন মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র।
কারন তার কথা মতোই বেচারি ব্রাহ্মণ গোপালের ঘরে চুরি করতে গিয়েছিল আর তাই তার এই অবস্থা!
যাই হোক, তিনি গোপাল এবং ব্রাহ্মণকে রাজসভায় ডেকে এনে ব্রাহ্মণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে তাকে পুরস্কৃত করলেন।
মহারাজ বুঝলেন গোপালের সঙ্গে লাগতে যাওয়া বুদ্ধিমানের মতো কাজ হয়নি তার।