আমেরিকার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শপথ নিয়েছেন জানুয়ারির ২০ তারিখ।
আর তার শপথের সপ্তাহ না ঘুরতেই তাদের মিত্রদেশ মায়ানমারে সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রের আইকন খ্যাত অং সান সু চি ও প্রসিডেন্ট সহ বিজয়ী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বহু নেতাদের আটক করেছে।
এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এই অভূত সময়ে মায়ানমারের বিরুদ্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করবে বাইডেন প্রশাষন।
যদি বিবৃতিতে দেখা যায়, আমেরিকান পররাষ্ট্রনীতি এর কঠোর সমালোচনা করেছে এবং কঠিন হুশিয়ারি দিয়েছে।
যাতে করে মায়ানমার সামরিক বাহিনী ঐ দেশের আটককৃত সকল নেতাদের অনতিবিলম্বে মুক্তি প্রদান করে।
মায়ানমারের এই সামরিক অভ্যুত্থান লোকের জন্য একটা ট্র্যাজেডি, যারা একনায়কতন্ত্রের অধীনে গতকয়েক দশকের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল এবং পরে ভঙ্গুর স্বাধীনতা উপভোগ করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের গণতন্ত্রকে উদ্বুদ্ধ করার এবং দেশকে চীনের কক্ষপথ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার প্রয়াসের ব্যর্থতাও চিহ্নিত করে।
দীর্ঘকাল পর গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি হল তখন কোনও স্বৈরাচারী নেতা নির্বাচন চুরি করতে চেয়েছিলেন,তবে মায়ানমারে গণতন্ত্র সোমবার সকালে স্থানীয় সময় ভোরে বিলীন হয়ে যায় এবং এটিকে সামরিক জান্তার আওতায় চলে যায়।
সামরিক সংবিধানের কারণে তাকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে নিষেধাজ্ঞার পর থেকে দেশের বেসামরিক নেতা অং সান সু চি গৃহবন্দি হয়ে আছেন, যেখানে তিনি গত ৩০ বছরের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করেছেন। গণতন্ত্রপন্থী নেতাদের চারদিকে জড়ো করা হয়েছে।
অং সান সুচি এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদদের আটক করার পরে মায়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানে মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে।
এদিকে মায়ানমারের সেনাপতিরা স্পষ্টভাবে অং সান সু চি-র বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কলুষিত সুনামের সুযোগ নিয়েছিলেন। মায়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য দোষী ছিল।
তার এই কট্টর অস্বীকৃতি মায়ানমারের জটিল রাজনৈতিক কাহিনীর বিবরণ চাপিয়ে দেওয়ার উদ্যোগে পশ্চিমারা অগ্রাহ্য করেছিল।
তবে “দ্য লেডি” মায়ানমারের অভ্যন্তরে প্রিয় রয়ে গেছে। তার বর্তমান দুর্দশার একটি অনুস্মারক যে নবজাতক গণতন্ত্র তারই সৃষ্টি,এটা পরিলক্ষিত।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার ইয়াঙ্গুন সফরের পর থেকে ওয়াশিংটন যে মায়ানমারের প্রতি মনোনিবেশ হারিয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ উচ্ছ্বসিত নাগরিক রাস্তায় নেমেছিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের সুসংহত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নীতির অভাব ছিল এবং কোথাও গণতন্ত্র সম্পর্কে খুব একটা যত্ন নেওয়া হয়নি। এর শীর্ষ আধিকারিকদের এমন অঞ্চলে খুব কমই দেখা গিয়েছিল যেখানে দেখানো সব কিছু। মায়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা নষ্ট করার কারণে ছিল আমেরিকার উদাসনীতি।
বর্তমান নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এশিয়ায় এই অভূত সমস্যার জন্য একটি পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞাগুলির হুমকি দিচ্ছেন, তবে করোনা মহামারীর মধ্যে অর্থনীতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা জনগণের জন্য আরও বেদনার কারণ হয়ে দাড়াবে। মায়ানমারের সেনাবাহিনী যখন ইন্টারনেট এবং যোগাযোগের নেটওয়ার্কগুলি বন্ধ করে দেয়, ব্যাংকগুলি বন্ধ করে দেয় এবং শহরের রাস্তায় সৈন্যের টহল প্রেরণ করে, তখন বাইডেন কি ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতিসংঘের নয়টি অন্যান্য এসোসিয়েশনের এই ক্র্যাকডাউনটির তীব্রতা হ্রাস করতে পারে?
তবে এখন চূড়ান্ত ভাবে মার্কিন প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে দেবে যে বাইডেন বৈশ্বিক গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য তার ব্রত অনুসরণ করতে কতদূর এগিয়ে চলেছেন।
অথবা তিনি চাইনিজ প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দুর্দান্ত ভূ-রাজনৈতিক অংশ হিসাবে রাজধানী নায়পাইদোর জেনারেলদের জন্য লাইন উন্মুক্ত রাখবেন কিনা।