মোহাম্মদ হাসান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করবে। করোনা মহামারির সংকটময় পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পালন করা হবে দিবসটি।
আজ ২৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সরকারি বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালিত হবে বলে জানিয়েছেন।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করবে।বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষা এবং একে এগিয়ে নিতে দলমত নির্বিশেষে সব অংশীজনের নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের পাশাপাশি বিরোধী দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র এগিয়ে যাচ্ছে।গণতন্ত্র একদিনে মহীরুহে রূপান্তরিত হয় না, পার করতে হয় অনেক পথ। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে যাত্রা চলমান, তাতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
বিজিবি মহাপরিচালক সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) এর ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরণের আন্ত:সীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদি পশু, জালমূদ্রা, স্বর্ণ প্রভৃতি চোরাচালানের ব্যাপারে উদে¦গ প্রকাশ করেন এবং এসকল অপরাধ দমনের জন্য বিএসএফ এর সহযোগিতা কামনা করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন যে, অবৈধ মাদক পাচারের ফলে উভয় দেশের যুব সমাজের মধ্যে মাদকাসক্তি মারাত্বকভাবে বেড়েছে যা উভয়ের জন্যই বিপদজনক এবং এটাকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা দরকার। এ ব্যাপারে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে চোরাকারবারীদের সম্পর্কিত এমন তাৎক্ষণিক ও দরকারী তথ্য পরস্পরের মধ্যে আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।
প্রচলিত আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ভারতীয় নাগরিক এবং বিএসএফ সদস্যরা প্রায়শই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে যা দু’টি বন্ধুত্বপূর্ণ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে- এ বিষয়ে বিজিবি মহাপরিচালক উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখতে বিএসএফের সহযোগিতা কামনা করেন। উভয় পক্ষই অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম/সীমানা লঙ্ঘন থেকে সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে বিরত রাখতে সম্মত হয়েছে এবং একই সাথে উভয় বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সীমান্তের নিয়ম নীতি বজায় রাখার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সম্মেলনে (ভার্চুয়ালি) ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী জেলার পদ্মা নদীর ১.৩ কি.মি. নিরীহ পথের অনুরোধ বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। বিজিবি মহাপরিচালক বিএসএফ মহাপরিচালককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিষয়টি অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্য অনুরোধ করেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা উল্লেখ করে বিএসএফ মহাপরিচালক ঐসব আস্তানার (যদি থাকে) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
উভয় পক্ষ বিদ্যমান পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষই পূর্বে অবগত করা ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। উভয় পক্ষই বন্ধ থাকা অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।
বিজিবি ও বিএসএফ উভয় মহাপরিচালক সম্মেলনের অর্জন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। উভয়েই সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। উভয় পক্ষ মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন আগামী এপ্রিল ২০২১-এর দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের ঢাকায় অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো: সাফিনুল ইসলাম, বিজিবিএম(বার), এনডিসি, পিএসসি এর নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন (২২-২৬ ডিসেম্বর ২০২০)-এ অংশগ্রহণ করেন। উক্ত সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী রাকেশ আস্থানা, আইপিএস এর নেতৃত্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহন করেন।